ঢাকা ০৭:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আখের ফলন কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:০৭:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৭
  • ৩৬২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আখের ফলন ভালো হওয়ায় চাঁদপুরে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প এলাকার কৃষক এবার আখ চাষে বেশি লাভবান হয়েছেন। তাদের জমিতে পানি না থাকায় বেশ সময় নিয়ে আখ বিক্রি করতে পারবেন। গেল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ‘চাঁদপুর গেণ্ডারি’ নামের আখ খুচরা ও পাইকারি বিক্রি শুরু হয়েছে। পাইকারি বিক্রি এখন শেষ পর্যায়ে। তবে খুচরা বিক্রি চলবে কয়েক মাস।
জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, জেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ বেশি হয়েছে। আখ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৭৫ হেক্টর; আর আবাদ হয়েছে ৫৮৩ হেক্টর জমিতে। এরই মধ্য ৭০ শতাংশ আখ কাটা হয়েছে। বাকি আখ ৩ থেকে ৪ মাস ধরে কাটা চলবে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার সকদি রামপুর গ্রামের কৃষক জাফর খান ও মদনেরগাঁও গ্রামের সেলিম বেপারী বলেন, জমিতে আলু থাকায় অবস্থায় আখ লাগান তারা। এ বছর আখের ভালো ফলন হয়েছে। তবে চাঁদপুর গেণ্ডারি নামের আখই বেশি চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে গ্রামগঞ্জের বাজারে খুচরা বিক্রি হয়েছে এ আখ। ছোট-বড় সাইজের প্রতি পিস আখ ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বিক্রি হয় পুরো জমি কিংবা ১০০ আখ একসঙ্গে দরদাম করে। সদর উপজেলার সোবহানপুর গ্রামের কৃষক কালু খান জানান, তিনি এ বছর ২ একর জমিতে আখের আবাদ করেছেন। তার আখও অনেক লম্বা হয়েছে। গেল মাস থেকে বিক্রি শুরু করেছেন। এখন শেষ পর্যায়ে। একই এলাকার কৃষক গোফরান গাজী জানান, তিনি এ বছর আলু আবাদ করে অনেক ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে রয়েছেন। এখনও সার-বীজের দোকানে বকেয়া রয়েছে। ৬০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছেন তিনি। ফলনও ভালো হয়েছে। তার জমিতে দুই জাতের আখ রয়েছে। একটি চাঁদপুর গেণ্ডারি; অন্যটি অমিতা (স্থানীয় নাম)। অল্প কিছু খুচরা বিক্রি করেছেন। বাকিগুলো কিছুদিন সময় নিয়ে পর্যায়ক্রমে বিক্রি করবেন। এতে তিনি ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন। নানুপুর গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম ও জালাল গাজী জানান, চাঁদপুরের আখ বেশিরভাগ নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ঢাকায় বিক্রি হয়। নদী ও সড়কপথে এসব জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় বহু বছর ধরে ওইসব এলাকার ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই আখ ক্রয় করে নিয়ে যান।
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আলী আহম্মদ জানান, জেলার মধ্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বেশি আখ চাষ হয়েছে। চলতি বছর এ উপজেলায় ২৬০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। চলতি মাসের তথ্যানুযায়ী, আখ কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। ‘চাঁদপুর গে-ারি’ আর ‘ইশ্বরদী-১৪’ নামের আখের আবাদ হয় চাঁদপুরে। এ বছর আখের ভালো ফলন হওয়ায় আগামীতে আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশা করছি। আখ চাষে কৃষককে সব ধরনের পরামর্শ অব্যাহত রেখেছি। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সরকারি আর্থিক সহযোগিতা পেলে চাঁদপুরে নতুন নতুন জাতের আখ চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে কৃষক অভিমত প্রকাশ করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আখের ফলন কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে

আপডেট টাইম : ০৩:০৭:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আখের ফলন ভালো হওয়ায় চাঁদপুরে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প এলাকার কৃষক এবার আখ চাষে বেশি লাভবান হয়েছেন। তাদের জমিতে পানি না থাকায় বেশ সময় নিয়ে আখ বিক্রি করতে পারবেন। গেল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ‘চাঁদপুর গেণ্ডারি’ নামের আখ খুচরা ও পাইকারি বিক্রি শুরু হয়েছে। পাইকারি বিক্রি এখন শেষ পর্যায়ে। তবে খুচরা বিক্রি চলবে কয়েক মাস।
জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, জেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ বেশি হয়েছে। আখ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৭৫ হেক্টর; আর আবাদ হয়েছে ৫৮৩ হেক্টর জমিতে। এরই মধ্য ৭০ শতাংশ আখ কাটা হয়েছে। বাকি আখ ৩ থেকে ৪ মাস ধরে কাটা চলবে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার সকদি রামপুর গ্রামের কৃষক জাফর খান ও মদনেরগাঁও গ্রামের সেলিম বেপারী বলেন, জমিতে আলু থাকায় অবস্থায় আখ লাগান তারা। এ বছর আখের ভালো ফলন হয়েছে। তবে চাঁদপুর গেণ্ডারি নামের আখই বেশি চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে গ্রামগঞ্জের বাজারে খুচরা বিক্রি হয়েছে এ আখ। ছোট-বড় সাইজের প্রতি পিস আখ ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বিক্রি হয় পুরো জমি কিংবা ১০০ আখ একসঙ্গে দরদাম করে। সদর উপজেলার সোবহানপুর গ্রামের কৃষক কালু খান জানান, তিনি এ বছর ২ একর জমিতে আখের আবাদ করেছেন। তার আখও অনেক লম্বা হয়েছে। গেল মাস থেকে বিক্রি শুরু করেছেন। এখন শেষ পর্যায়ে। একই এলাকার কৃষক গোফরান গাজী জানান, তিনি এ বছর আলু আবাদ করে অনেক ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে রয়েছেন। এখনও সার-বীজের দোকানে বকেয়া রয়েছে। ৬০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছেন তিনি। ফলনও ভালো হয়েছে। তার জমিতে দুই জাতের আখ রয়েছে। একটি চাঁদপুর গেণ্ডারি; অন্যটি অমিতা (স্থানীয় নাম)। অল্প কিছু খুচরা বিক্রি করেছেন। বাকিগুলো কিছুদিন সময় নিয়ে পর্যায়ক্রমে বিক্রি করবেন। এতে তিনি ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন। নানুপুর গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম ও জালাল গাজী জানান, চাঁদপুরের আখ বেশিরভাগ নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ঢাকায় বিক্রি হয়। নদী ও সড়কপথে এসব জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় বহু বছর ধরে ওইসব এলাকার ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই আখ ক্রয় করে নিয়ে যান।
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আলী আহম্মদ জানান, জেলার মধ্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বেশি আখ চাষ হয়েছে। চলতি বছর এ উপজেলায় ২৬০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। চলতি মাসের তথ্যানুযায়ী, আখ কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। ‘চাঁদপুর গে-ারি’ আর ‘ইশ্বরদী-১৪’ নামের আখের আবাদ হয় চাঁদপুরে। এ বছর আখের ভালো ফলন হওয়ায় আগামীতে আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশা করছি। আখ চাষে কৃষককে সব ধরনের পরামর্শ অব্যাহত রেখেছি। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সরকারি আর্থিক সহযোগিতা পেলে চাঁদপুরে নতুন নতুন জাতের আখ চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে কৃষক অভিমত প্রকাশ করেন।